পাঠ ২

পাঠ ২ – গুনাহ্ আমাদেরকে খোদার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে

সমস্ত সমস্যার মধ্যেও আমাদের সবচেয়ে প্রয়োজন হলো প্রথমেই খোদাকে, কিন্তু পাঠ ২ অনুসারে দেখা যায় তা আমাদের জন্য বেশ কঠিন। কারণ – গুনাহ্ আমাদেরকে খোদার দয়া ও সান্নিধ্যে এবং তাঁর সমস্ত রহমত থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে। আমরা এই পৃথিবীতে গুনাহ্রে মধ্যে এমনভাবে নিমজ্জিত, যার ফলে আমাদের রূহানিক জীবনের অবক্ষয় হচ্ছে।

খোদা আলো। তাঁর আলোর মধ্যে থেকে জীবন-যাপন করার পথে একমাত্র বাধা হলো গুনাহ্। আর এটাই হলো আমাদের জন্য একটা দুঃসংবাদ। পবিত্র কোরআন ও কিতাবুল মোকাদ্দস উভয় কিতাব এই বিষয়ে আমাদেরকে স্পষ্টভাবে শিক্ষা দেয়।

নবিদের কিতাব; ইশাইয় ৫৯ঃ ২ আয়াত – কিন্তু তোমাদের অন্যায় মাবুদের কাছ থেকে তোমাদের আলাদা করে দিয়েছে। তোমাদের গুনাহের দরুন তিনি তাঁর মুখ তোমাদের কাছ থেকে ফিরিয়ে নিয়েছেন, সেজন্য তিনি শুনেন না।

আল-জবুর; ৬৬ রূকু ১৮ আয়াত – আমার দিলে যদি আমি অন্যায় পুষে রাখতাম, তাহলে আমার কথা দ্বীন-দুনিয়ার মালিক শুনতেন না।

ইঞ্জিল শরীফ; ১ ইউহোন্না ১ঃ ১০ আয়াত – যদি বলি আমরা গুনাহ্ করিনি তবে আমরা তাঁকে (খোদাকে) মিথ্যাবাদী বানাই, আর তাঁর কালাম আমাদের অন্তরে নেই।

আল-কোরআন; সুরা বাকারা ৮১ আয়াত – হাঁ, যারা পাপ কার্য করে এবং যাদের পাপরাশি তাহাদিগকে পরিবেষ্টন করে তারাই অগ্নিবাসী, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে।

পবিত্র কোরআনের উপরোল্লিখিত আয়াতটির মাধ্যমে বুঝা যায়, “গুনাহ্ যে বেতন দেয় তা মৃত্যু” (ইঞ্জিল শরীফ; রোমীয় ৬ ঃ ২৩ আয়াত)। গুনাহ্রে দ্বারা আমরা যা লাভ করি তা হলো, শয়তানের দেয়া “বেতন”। সূরা বাকারা ৮১ আয়াত অনুসারে- একজন গুনাহ্গার তাঁর গুনাহ্ দ্বারা চতুর্দিকে বেষ্টিত থাকে। আর তাই সে চিরকালের জন্য দোজখে চলে যায়। কিš‘ আমরা জানি, খোদা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন; যেন তারা তাঁর সাথে ঘনিষ্ট সম্পর্ক রেখে সবসময় বেহেশতি আনন্দ উপভোগ করতে থাকে। কিন্তু মানুষ তাঁর ইচ্ছামত স্বাধীনভাবে চলতে গিয়ে খোদার অবাধ্য হতে থাকে। খোদার সাথে বিদ্রোহ বা নিজের স্বাধীন ইচ্ছায় চলা এ সমস্ত বিষয়কে কিতাবুল মোকাদ্দস বিভিন্ন নামে আখ্যায়িত করেছে। যেমন- গুনাহ্ করা,অবাধ্য হওয়া এবং খোদার আইন অমান্য করা ইত্যাদি।

তাছাড়াও খোদার দৃষ্টিতে সক্রিয় বিদ্রোহ এবং নিষ্ক্রিয় নিরপেক্ষতা এই উভয় পথের মধ্যে কোনটির কতটুকু গুরুত্ব? আপনি কি মনে করেন যে, নিষ্ক্রিয় নিরপেক্ষতাও গুনাহ্ হিসেবে গণ্য করা হয়? সক্রিয় বিদ্রোহ এবং নিষ্ক্রিয় নিরপেক্ষতা এর মধ্যে আপনার দৃষ্টিতে কোনটি সাধারণ বলে মনে হয়? আপনি যদি একটু গভীরভাবে বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করেন, তাহলে বুঝতে পারবেন সত্যিকার অর্থে উভয়ই গুনাহ্। খোদা এবং শয়তানের সাথে সম্পর্কের মধ্যখানে কোন পথ নেই। আপনাকে যে কোন একটি পথ ধরে চলতে হবে।

গুনাহ্ শুধু আমাদের জন্য একটি দুঃসংবাদ তা নয়, ইহা একটি অত্যন্ত দুঃসংবাদ। কারণ, এই গুনাহ্ই আমাদেরকে খোদার কাছ থেকে পৃথক করে রাখে। আর পৃথক হবার ফলে আমরা ভীত, নৈরাশ্য, নিঃস্ব, দোষী, উদ্দেশ্যহীনতা, শান্তিহীনতা এবং নিরাপত্তাহীনতা অনুভব করি। যখন আমরা সক্রিয়ভাবে গুনাহের পশ্চাতে পরিচালিত হই, তখন ধীরে ধীরে আমরা এতই বিপদগামী হয়ে পড়ি যে, নিজেরা নিজের অজান্তেই ধ্বংসাত্মক আচরণ করি। আমরা যদি চূড়ান্তভাবে খোদাকে অগ্রাহ্য করি; তখন আমরা নিজেরা নিজেদেরকে খোদার জায়গায় উপস্থাপন করি এবং যার ফলে আমরা নিজের ভালমন্দের বিচার নিজেরাই করে ফেলি।

অধিকাংশ মানুষ গুনাহের বিষয়টাকে এড়িয়ে চলতে গিয়ে নিজের অজান্তেই গুনাহ্কেই হৃদয়ে লালন করে রাখে। ফলে, সেসব লোক ধীরে ধীরে গুনাহের অধীনে চলতে থাকে। আবার অনেক লোক আছে, তারা বিশ্বাস করতে চায় না যে, মানবজাতি আদৌ গুনাহ্গার। যদিও কখনও কখনও আমাদের বাহ্যিক আচার-আচারণে আমাদেরকে ভাল মানুষ সাজতে সাহায্যে করে। তাই বলে, আমরা যে গুনাহ্গার নই- এ রকম সিদ্ধান্তে পৌছানো কতটুকু বাস্তব সম্মত?

পবিত্র কিতাব সমূহ এ বিষয়ে আমাদেরকে কি শিক্ষা দেয়, আসুন, তা আমরা আলোচনা করিঃ

নবিদের কিতাব; ১ বাদশাহনামা ৮ঃ ৪৬ আয়াত – অবশ্য গুনাহ্ করে না এমন লোক নেই। ইহিস্কেল ১৮ঃ ২০ আয়াত – যে গুনাহ্ করবে সে-ই মরবে। হোশেয় ৮ঃ ৭ আয়াত – তারা তো বাতাস বুনে আর শেষে ঘূর্ণিঝড় কাটে।

আল-জবুর; ৫১ রুকু ৫ আয়াত – দেখ, অপরাধে আমার জন্ম হয়েছে, গুনাহে আমার মাতা আমাকে গর্ভে ধারণ করেছিলেন। ১৩০ রুকু ৩ আয়াত – হে মাবুদ, তুমি যদি অন্যায়ের হিসাব রাখ, তবে হে মালিক, কে দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে। ১৪৩ রুকু ২ আয়াত – তোমার এই সেবাকারীর বিচার করো না, কারণ তোমার চোখে কোন প্রাণীই নির্দোষ নয়।

ইঞ্জিল শরীফ; রোমীয় ৩ঃ ১০ আয়াত – ধার্মিক কেউ নেই, একজনও নেই। রোমীয় ৩ঃ ২৩ আয়াত – কারণ সবাই গুনাহ করেছে এবং খোদার প্রশংসা পাবার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। গালাতীয় ৬ঃ ৭ আয়াত – তোমরা ভুল করো না, খোদার সংগে তামাশা চলে না, কারণ যে যা বুনবে সে তা-ই কাটবে। ১ ইইহোন্না ১ : ৮ আয়াত – যদি আমরা বলি আমাদের মধ্যে গুনাহ্ নেই তবে আমরা নিজেদের ফাঁকি দিই। তাতে এটাই বুঝা যায় যে, আমাদের অন্তরে খোদার সত্য নেই।

আল-কোরআন; সূরা যারিয়াত ৫৯-৬০ আয়াত – যালিমদের প্রাপ্য তা-ই যা অতীতে উহাদের সমমতাবলম্বীরা ভোগ করেছে। সুতরাং উহারা ইহার জন্য আমার নিকট যেন ত্বরা না করে। কাফিরদের জন্য দুর্ভোগ তাদের সেই দিনের, যেই দিনের বিষয়ে উহাদিগকে সতর্ক করা হয়েছে।

সূরা আনকাবূত ৪০ আয়াত – উহাদের প্রত্যেককেই আমি তার অপরাধের জন্য শাস্তি দিয়েছিঃ উহাদের কারও প্রতি প্রেরণ করেছি প্রস্তরসহ প্রচন্ড ঝটিকা; উহাদের কাকেও আঘাত করেছিলাম মহানাদ, কাকেও আমি প্রোথিত করেছিলাম ভূগর্ভে এবং কাকেও করেছিলাম নিমজ্জিত। আল্লাহ তাদের প্রতি কোন যুলুম করেন নাই; তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি যুলুম করেছিল।

উপরোল্লেখিত পবিত্র কোরআনের আয়াত দু’টিতে গুনাহের ক্রমবৃদ্ধি ও তার বিচার সম্পর্কে অনেক কিছু বর্ণনা করা হয়েছে। সূরা যারিয়াত ৫৯-৬০ আয়াত দ্বারা বুঝা যায়, যারা মন্দ এবং খারাপ কাজ করে তারা শাস্তি পাবে। যদিও বা খোদা তাদেরকে শাস্তি দিবার জন্য তাড়াতাড়ি করেন না, কারণ- এমন একটি ভয়ংকর দিন আসবে যখন তিনি তাদেরকে শাস্তি দিতে আরম্ভ করবেন। একইভাবে সূরা আনকাবূত ৪০ আয়াত অনুসারে বুঝা যায় যে, যারা গুনাহে জীবন যাপন করে চলেছে তাদের গুনাহের জন্য খোদার কাছে জবাবদিহি করতে হবে।

এই আয়াতগুলো দ্বারা আরো বুঝা যায় যে, খোদা কাউকে পাথর দ্বারা ও কাউকে মহামারী দ্বারা আঘাত করবেন। আবার কাউকে ভূ-গর্ভে নিক্ষেপ করবেন এবং কাউকে করবেন নিমজ্জিত। এখানে খোদা গুনাহ্ ও গুনাহ্গারদের বিষয়ে বলেছেন। আমরা মনে প্রাণে বিশ্বাস করি যে, খোদা পবিত্র। তিনি এতই পবিত্র যে, গুনাহ্ বিন্দুমাত্র তিনি সহ্য করতে পারেন না। কিš‘ আমরা এই গুনাহ্পূর্ণ পৃথিবীতে বসবাস করতে গিয়ে যে গুনাহ্গার তা শুধু নয়, সেই আদি পিতা হযরত আদম (আঃ) হতে আমরা গুনাহের মধ্যে দিয়ে বসবাস করে আসছি। কোন না কোন ভাবে আমরা গুনাহের সাথে জড়িত হয়ে যা”িছ। কিš‘ খোদার বিচারের সামনে যখন আমাদের প্রত্যেককে উপ¯ি’ত হতে হবে, তখন তিনি ন্যায় বিচার করতে ভুল করবেন না এবং নিশ্চয়ই গুনাহ্রে শাস্তি দিবেন। আর যারা গুনাহের মধ্যে ডুবে আছে তার ফল যে শাস্তি তা তাদের অনিবার্য ভাবে বহন করতে হবে।

অনেকে মনে করে থাকে যে, গুনাহ্রে শাস্তি বলতে তেমন কিছু হবে না। একটি মন্দ কাজ করলে বা গুনাহ্ করলে, তার বিপরীতে যদি এর অধিক ভালকাজ বা ছওয়াবের কাজ করা যায় তাহলে ঐ গুনাহের জন্য কোন শাস্তি পেতে হবে না। সেরকম যারা মনে করে থাকে তাদের উদ্দেশ্যে আল্লাহ্ বলেছেন ঃ

আল-কোরআন; সূরা রুম ১০ আয়াত- অতঃপর যারা মন্দ কর্ম করেছিল তাদের পরিণাম হয়েছে মন্দ। সূরা বাকারা ৩০ আয়াতÑ যখন তোমার প্রতিপালক ফেরেস্তাদের বললেন, “আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি সৃষ্টি করতেছি।” তারা বলল, “আপনি কি সেখানে এমন কাকেও সৃষ্টি করবেন, যে অশান্তি ঘটাবে ও রক্তপাত করবে?”

এদোন উদ্যান অর্থাৎ বেহেশতের বাগান সৃষ্টির পূর্বে খোদা ফেরেস্তাগণকে বলেছেন যে, পৃথিবীতে তাঁর প্রতিনিধিত্ব করার জন্য এমন একজনকে রাখতে যা”েছন; যিনি হবেন মানুষ। ফেরেস্তাগণ তখন বললেন, “কি”? “কিš‘ মানুষ তার গুনাহের দরুন পৃথিবীকে ধ্বংস করবে।”

সূরা বাকারা ৩৬ আয়াত- শয়তান উহা হতে তাদের [হযরত আদম (আঃ) ও বিবি হাওয়া (আঃ)] পদস্খলন ঘটাল এবং তারা যেখানে ছিল সেখান হতে তাহাদিগকে বহিস্কৃত করল। সূরা আ’রাফ ২২-২৩ আয়াতÑ তাদের [হযরত আদম ও বিবি হাওয়া (আঃ)] প্রতিপালক তাহাদিগকে সম্বেবাধন করে বললেন, আমি কি তোমাদের এই বৃক্ষের নিকটবর্তী হতে বারণ করি নি এবং আমি কি তোমাদিগকে বলিনি যে, শয়তান তো তোমাদের প্রকাশ্য শত্রæ? তারা বলল, হে আমাদের প্রতিপালক, আমরা নিজেদের প্রতি অন্যায় করেছি। যদি তুমি আমাদিগকে ক্ষমা না কর এবং দয়া না কর তবে তো আমার ক্ষতিগ্র¯’দের অন্তর্ভূক্ত হব।

উপরোল্লেখিত আয়াতগুলো থেকে বুঝা যায় যে, এমন কোন ভাল কাজ নেই যা আমাদেরকে আমাদের গুনাহ্ থেকে উদ্ধার করতে পারে। তাঁরা বললেন, আমরা গুনাহ্গার এবং যদি খোদা আমাদের উদ্ধার না করতেন তাহলে আমরা ধ্বংস হয়ে যেতাম। অনেক ধর্মীয় শিক্ষকেরা আদি গুনাহ্ সম্পর্কে বলেন না। কিš‘ পবিত্র কোরআন ও কিতাবুল মোকাদ্দস আমাদেরকে সেই বিষয়ে স্পষ্টভাবে বলেছেন। কিতাব এ কথা বলে, আমরা শুধু এই পৃথিবীতে মন্দ কাজ করার মাধ্যমে গুনাহ্গার হই তা নয়, বরং হযরত আদম ও বিবি হাওয়া (আঃ) এর গুনাহ্ করার ফলে মানবজাতি রক্তের উত্তরাধিকারী সূত্রে তখন থেকে গুনাহ্ বহন করে আসছে।

আল-কোরআন; সূরা ত্বা-হা ১২১ আয়াত- আদম তার প্রতিপালকের হুকুম অমান্য করল, ফলে সে ভ্রমে পতিত হল। সূরা ইব্রাহীম ৩৪ আয়াত- মানুষ অবশ্যই অতিমাত্রাই যালিম, অকৃতজ্ঞ। সূরা আহযাব ৭২ আয়াত- সে (মানুষ) তো অতিশয় যালিম, অতিশয় অজ্ঞ।

উপরোল্লেখিত তিনটি আয়াতের সাথে ইঞ্জিল শরীফের রোমীয় ৩ ঃ ২৩ আয়াতের মিল রয়েছে- “কারণ সবাই গুনাহ্ করেছে এবং খোদার প্রশংসা পাবার অযোগ্য হয়ে পড়েছে।”

আল-কোরআনে আরো উল্লেখ আছে যে, সূরা আল-ইমরান ১১ আয়াত- আল্লাহ তাদের পাপের জন্য তাহাদিগকে শাস্তিদান করেছিলেন। আল্লাহ্ শাস্তিদানে অত্যন্ত কঠোর। সূরা ফাতির ১০ আয়াত- যারা মন্দ কার্যের ফন্দি আঁটে তাদের জন্য আছে কঠিন শাস্তি, তাদের ফন্দি ব্যর্থ হবেই। সূরা নাহ্ল ৩৪ আয়াত- সুতরাং উহাদের উপর আপতিত হয়েছিল উহাদেরই মন্দ কর্মের শাস্তি এবং উহাদিগকে পরিবেষ্টন করেছিল তা-ই, যা লয়ে উহারা ঠাট্টা বিদ্রæপ করত।

এই আয়াতগুলো থেকে বুঝা যায় যে, মানুষের গুনাহ্রে প্রতিফল তার নিজের প্রতিই ফিরে আসে। কেউ যদি কাউকে ফাঁদে ফেলতে চায়, তবে সে নিজেই তাতে পতিত হয়। নিজের গুনাহ্ নিজেকে খুঁজে বের করতে হবে। যখন আপনি আপনার গুনাহ্ আলোর সামনে নিয়ে আসবেন, তখন দেখতে পাবেন, একই গুনাহ্ বার বার করে যা”েছন।

আল-কোরআন; সূরা জাছিয়া ৭-৮ আয়াত- দুর্ভোগ প্রত্যেক ঘোর মিথ্যাবাদী পাপীর, যে আল্লাহর আয়াত সমূহের তিলাওয়াত শুনে অথচ ঔদ্ধ্যত্যের সাথে অটল থাকে (গুনাহ্রে মধ্যে) যেন সে উহা শুনে নাই। সূরা বাকারা ২৭৬ আয়াত- আল্লাহ্ কোন অকৃতজ্ঞ পাপীকে ভালবাসে না।

যদি আমরা উপরোল্লেখিত আয়াতগুলো নিয়ে আলোচনা করি, তাহলে বুঝা যায় যে, গুনাহ্ হলো একটি বাস্তবতা। ইহাকে আমরা অস্বীকার করতে পারি না। গুনাহ্ যে পৃথিবীতে বিরাজমান এ সত্যকে মেনে নিয়ে আমাদেরকে এর শাস্তি থেকে উদ্ধার পাবার উপায় খুঁজে বের করতে হবে। অনেক সময় আমরা বাহ্যিক ব্যাপার গুলোকে গুনাহ্ হিসেবে গণ্য করি এবং এর থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চাই। কিš‘ আমরা জানি, বাহ্যিক মন্দতার চেয়েও আমাদের হৃদয়কে পবিত্র রাখা আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

এ বিষয়ে পবিত্র ইঞ্জিল শরীফ; মথি ২৩ ঃ ২৫-২৮ আয়াতে হযরত ঈসা মসিহ্ বলেছেন, “ভন্ড আলেম ও ফরীশীরা, ঘৃণ্য আপনারা! আপনারা থালা-পেয়ালার বাইরের দিকটা পরিষ্কার করে থাকেন, কিš‘ সেগুলো জুলুমের জিনিষ আর লোভের ফল দিয়ে পূর্ণ। অন্ধ ফরীশীরা, আগে সেগুলোর ভিতরের দিকটা পরিষ্কার করুন, তাতে তাঁর বাইরের দিকটাও পরিষ্কার হবে। ভন্ড আলেম ও ফরীশীরা, ঘৃণ্য আপনারা! আপনারা চুনকাম করা কবরের মত, যার বাইরের দিকটা সুন্দর কিš‘ ভিতরটা মরা মানুষের হাড় গোড় ও সব রকম ময়লায় ভরা। ঠিক সেইভাবে, বাইরে আপনারা লোকদের চোখে ধার্মিক কিš‘ ভিতরে ভÐামি ও গুনাহ্পেূর্ণ।”

তাই যতক্ষণ পর্যন্ত একজন ব্যক্তি তার হৃদয়ের গুনাহ্কে দেখতে না পায়, ততক্ষণ পর্যন্ত সেইব্যক্তি সত্যিকার অর্থে গুনাহ্ সম্পর্কে বুঝতে পারবে না। যখন একজন গুনাহ্ সম্পর্কে সঠিক ভাবে না বুঝে তাহলে এর থেকে নাজাত লাভের প্রয়োজনীয়তাও সে উপলব্ধি করতে পারবে না। লক্ষ্য করুন, আপনাকে যদি এখন প্রশ্ন করা হয় যে, আপনি কি একজন গুনাহ্গার? হয়ত আপনি নিজের হৃদয়েই তা মেনে নিতে প্রস্তুত যে, খোদার দৃষ্টিতে আপনি একজন গুনাহ্গার। যদি আপনি সত্যিই মনে করে থাকেন যে, আপনি একজন গুনাহ্গার, তাহলে এই গুনাহকে কি আপনি নিজেই ভাল কাজ দিয়ে বা অন্য যে কোনভাবে হোক তা থেকে মুক্ত হতে পারবেন?

পাঠ ৩ এ আমরা সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। এরপূর্বে এই পাঠের সাথে সংযুক্ত প্রশ্নপত্রটি পূরণ করে আমাদের কাছে পাঠিয়ে দিন। আপনি ইতিমধ্যে ২টি পাঠ শেষ করেছেন, সেজন্য আপনাকে ধন্যবাদ। খোদা আপনাকে রহমত দান করুন। আমেন।

পাঠ ২ঃ প্রশ্নপত্র

প্রত্যেক প্রশ্নের সঠিক উত্তরটির বৃত্তের মধ্যে ক্লিক করুন, এবং নীচে Submit- বাটন এ ক্লিক করে আমাদের কাছে পাঠিয়ে দিন।

Welcome to your পাঠ ২

জেলা / এলাকা
নাম
বয়স
ঠিকানা
পেশা
ই-মেইল
মোবাইল

১. আমরা এ পৃথিবীতে কিসের মধ্যে নিমজ্জিত?

২. খোদা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন যেন – 

৩. যালিমদের প্রাপ্য কি?

৪. সূরা আ’রাফ ২২-২৩ আয়াতে খোদা হযরত আদম ও বিবি হাওয়া (আঃ)-কে বলেছেনÑ

৫. মানুষ কিভাবে গুনাহ্গার?

৬. খোদার সামনে সমস্ত মানুষ কি গুনাহ্গার?

৭. খোদা গুনাহ্গারকে ভালবাসেন নাÑ এই বিষয়ে আপনি কি মনে করেন?

৮. খোদার মহব্বতের মধ্যে থাকবার জন্যÑ

৯. আপনি কি একজন গুনাহ্গার? কেন?

১০. খোদা ফেরেস্তাগনকে তাঁর কি পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন?

Translate »